তৃণমূল বিশেষ প্রতিবেদক:
রাজশাহীর দুর্গাপুরে ইউনিয়ন বিএনপি’র অফিস উদ্বোধনের শুরুতেই হামলা চালিয়ে ভেঙ্গে ফেললো কৃষকদল নেতা। হামলায় সাংবাদিক সহ ৫ বিএনপি নেতা গুরুতর আহত হয়েছে। সোমবার (২১ অক্টোবর) সন্ধায় উপজেলার জয়নগর ইউপির দাউকান্দি বাজারে এই ঘটনা ঘটে। আহতদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স্রে ভর্তি করা হয়েছে। দুর্গাপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে। তবে এবিষয়ে ওই এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে, যে কোন মূহুর্তে বড় ধরনের সংঘর্ষের আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
আহতরা হলেন দৈনিক কালবেলা’র দুর্গাপুর প্রতিনিধি রাজু আহমেদ (৩২), উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের সদস্য পািরলা গ্রামের শাহাজালাল হোসেন দেলশাদ (৪৫), ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম (৪০), বিএনপি কর্মী দাউকান্দি গ্রামের আনোয়ার হোসেন বুদু (৪৮), বেলাল উদ্দিন (৫০)।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বিএনপিকর্মী আব্দুস সাত্তার বলেন, উপজেলার দাউকান্দি বাজারের মোজাফ্ফরের মার্কেটে জয়নগর ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয় এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জয়নগর ইউনিয়ন বিএনপি। বিকেল থেকে উদ্বোধনী স্থানে ইউনিয়নের বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত হতে থাকেন। সন্ধা ৭টায় ্ইউনিয়ন বিএনপি’র সদস্য সচিব গোলাম মোরশেদ শিবলী, ইউনিয়ন বিএনপি’র সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াদ আলী, সিনিয়র যুগ্ন সাধারন সম্পাদত আকবর আলী, দাউকান্দি ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি ইশরাক হোসেন মন্ট, সাধারন সম্পাদক দুলাল হোসেন সহ ইউয়িনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের উপস্থিতিতে কার্যালয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু করা মাত্র জেলা কৃষকদলের সদস্য ও সাবেক ইউপি সদস্য খায়রুল ইসলামের নেতৃত্বে ইউনিয়ন কৃষকদলের সভাপতি জয়ণাল আবেদীন, যুবদল নেতা জিয়া, জয়, শাহাবুর সহ ১৫ থেকে ২০জন হামলা চালিয়ে কার্যালয়ের আসবাবপত্র চেয়ার টেবিল ভাঙ্চৃর করতে থাকে এসময় পেশাগত দায়িত্ব পালন করার জন্য হামলা ভাংচুরের ভিডিও ও ছবি তুলার চেষ্টা করলে দৈনিক কালবেলা পত্রিকার দুর্গাপুর প্রতিনিধি রাজু আহমেদকে মারপিট করে ক্যামেরা ভাংচুর করে কালবেলা পত্রিকার বুম কেড়ে নেয় হামলার নেতৃত্ব প্রদানকারী জেলা কৃষকদলের সদস্য সাবেক ইউপি সদস্য খায়রুল ইসলাম। এসময় কার্যালয় উদেদ্বাধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত নেতাকর্মীরা আসবাবপত্র ভাংচুরে বাঁধা দিলে নেতাকর্মীদের ওপর ওপরর্যপুরি হামলা চালিয়ে ৪বিএনপি নেতাকে মারপিট করে গুরুতর আহত করে। আহতদের মধ্যে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিবুল ইসলামের অবস্থা আশংকা জনক বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। বিএনপি নেতারা দুর্গাপুর থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে। তবে এবিষয়ে ওই এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে, যে কোন মূহুর্তে বড় ধরনের সংঘর্ষের আশংকা করছেন স্থানীয়রা। ইদকে ধৈসিক কালবেলা পত্রিকার সাংবাদিক রাজু আহমেদকে মারপিট করে ক্যামেরা ভাংচুর ও বুম কেড়ে নেওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশের মাধ্যমে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে হামলাকারীদের সনাক্তের মাধ্যমে তাদের আইনের আওতায় নেওয়ার জোর দাবী জানান দুর্গাপুর সাংবাদিক সমাজ ও দুর্গাপুর প্রেসক্লাবে কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ।
কার্যালয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজক জয়নগর ইউনিয়ন বিএনপি’র সদস্য সচিব গোলাম মোরশেদ শিবলী’র সাথে যোগাযোগের জন্য তার ব্যবহৃত ফোন ০১৭৬৫৫৮৪৮৭০ নম্বরে একাধিকবার ফোন করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
হামলার স্বীকার গুরুতর আহত বিএনপি কর্মী দাউকান্দি গ্রামের আনোয়ার হোসেন বুদু বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের হাতে মার খাওয়া সহ মামলা হামলার স্বীকার হয়েছি। আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর এখন নিজ দরীয় নেতাকর্মীদের হাতে মার খেতে হচ্ছে, এর চেয়ে বড় কষ্ট বা দূঃখ কি হতে পারে। তবে দরীয় নেতাকর্মীরা দলের অফিসে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে বিএনপির নেতাকর্মীদের মারপিট করার পেছেন উপজেলার সিনিয়র নেতাদের ইন্ধন রয়েছে। আমি একজন ক্ষুদ্র কর্মী হয়ে সাংবাদিকদের মাধ্যমে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব ফকরুল্ ইসলাম আলমগীর মহোদয়ের নিকট এই ঘটনার সুষ্টু তদন্ত করে এই ঘটনা সৃষ্টিতে সহায়তাকারী ইন্ধনদাতা, হামলার পরিকল্পনাকারী ও হামলাকারীদের চিহ্নিত করে দলীয় সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জোরদাবী জানাচ্ছি।
জয়নগর ইউনিয়ন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ন সম্পাদক আকবর আলী বলেন, নিজেদের রাজনৈতিক দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করা এবং দলীয় নেতাকর্মীদের মারপিট করার বিষয়টি অত্যান্ত দূঃখ জনক ঘটনা। উপজেলা ও জেলা পর্যায়েরে সিনিয়র নেতাদের নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের জন্য এই হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। হামলাকারী ও হামলায় ইন্ধনদাতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।
এবিষয়ে হামলায় নেতৃত্বপ্রদানের অভিযোগে অভিযুক্ত করা জেলা কৃষকদলের সদস্য ও সাবেক ইউপি সদস্য খায়রুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিককে মারপিট করে ক্যামেরা ভাংচুরের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নিজেদের দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে সাংগঠনিক বিষয়ে কিছু জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় হট্রগোলের ঘটনা ঘটেছে মাত্র, সেখানে কোন মারপিটের ঘটনা ঘটেনি।
এবিষয়ে দুর্গাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দূরুল হুদা বলেন, জয়নগর ইউনিয়নের দাউকান্দিতে বিএনপি নেতাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার কথা জানতে পেয়ে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে। ওই ঘটনায় সাংবাদিক সহ কয়েকজন আহত হয়েছে বলে শুনেছি, এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ বা মামলা করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।